শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এরশাদের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে মন্তব্য করায় সংসদে দাঁড়িয়ে সবার কাছে নিঃশর্তভাবে করজোড়ে ক্ষমা চেয়েছেন বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা। সাবেক এই স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমি যদি কোনো রকমের ভুল করে থাকি তার জন্য ক্ষমা চাচ্ছি, নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। আমার কোনো ভুল ত্রুটি হলে সবাই আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’
আজ বুধবার জাতীয় সংসদে কার্যপ্রণালি বিধির ২৭৪ বিধিতে নিজের কৈফিয়ত দিতে গিয়ে এসব কথা বলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও এরশাদের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনকে নিয়ে মন্তব্য করার পরিপ্রেক্ষিতে এর আগে মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) তাকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার দাবি আসে সংসদ থেকে। কোনো কোনো এমপি তাকে জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কারও চান। তবে জাতীয় পার্টির কয়েকজন সিনিয়র নেতা বলেন, এটা তাদের দলীয় বক্তব্য নয়।
সংসদে মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, “জাতীয় পার্টির অভ্যন্তরীণ একটি গণতন্ত্র দিবস পালন নিয়ে আমাদের একটা সংক্ষিপ্ত পরিসরে অনুষ্ঠান ছিল। একই দিনে নূর হোসেনের দিবস নিয়ে একটি আলোচনা ছিল। পুরান ঢাকা থেকে আমাদের কিছু লোক আসার সময় নূর হোসেন চত্বরে তাদের গালাগালি করা হয়। বলা হয়,‘এরশাদের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’। এসব কিছু কথাবার্তা শোনার পর আমাদের অফিসে এসে তারা আমাদের বলেন। আমি দলের মহাসচিব হিসেবে তাদের শান্ত থাকতে বলি।”
সংসদে তার এ বক্তব্যের সময় সংসদে উপস্থিত অনেক এমপি হৈ-হুল্লোড় করতে থাকেন। উত্তেজিত এমপিদের উদ্দেশে রাঙ্গা বলেন, ‘কোনো মন্তব্য করার আগে আমার কথাটা শুনুন।’ এ সময় সংসদে সভাপতিত্বে থাকা স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য, আপনি বলতে থাকুন, আপনি বলুন।’রাঙ্গা বলেন, ‘আমাদের সাবেক সিনিয়র মন্ত্রী মহোদয় সংসদে এই নিয়ে আলোচনা করেছেন। আমার স্থানীয় সরকারের সাবেক সিনিয়র মন্ত্রীও আলোচনা করেছেন মঙ্গলবার সংসদে। আমি মনে করি, তারা আমাকে শাসন করেছেন। আমি এটা ভুল করেছি এবং ভুল করার জন্য আমি তার (নূর হোসেন) পরিবারের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। এমনকি বিবৃতিও দিয়েছি।’
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, ‘সংসদে আমার কলিগ আছেন, তারাও এটা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, হয়তো আমার দল ক্ষমতায় আসলেও আমি মন্ত্রী হতে পারতাম না। কিন্তু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে মন্ত্রী করেছেন। তিনি আমাকে অনেক ভালোবাসতেন। আমি মনে করি, সেই সম্পর্ক উনার সঙ্গে আমার থাকবে। আমি এখানে কাউকে কটাক্ষ করে কিছু বলতে চাই না। সব দোষ আমার ঘাড়ে নিচ্ছি। আমার হয়তো ভুলত্রুটি হতে পারে।সুতরাং আমি মনে করি, এখানকার মাননীয় মন্ত্রী, এমপিরা আমার কোনো ভুলত্রুটি হলে আমাকে ক্ষমা করে দেবেন।’